সাইফুর নিশাদ, নরসিংদী প্রতিনিধি: একজন সন্তানকে তার মা-ই সবচাইতে বেশি ভালোবাসতে পারে। এ কথা সকলেরই জানা। কারন সন্তানকে যে মাতৃস্নেহ ভালোবাসা দিয়ে বড় করে তুলে মা তেমনি করে পৃথিবীতে আর কেউ পারবেনা।

পৃথিবীতে মায়ের তুলনা হয়না।মায়ের তুলনা শুধু মা-ই।মায়ের প্রতি সন্তানের অগাধ শ্রদ্ধা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ভালোবাসা যে শুধু মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান থাকবে তা নয়।পশুর মধ্যেও যে মায়ের প্রতি ভালোবাসা বিদ্যমান তার-ই অন্যন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরী করেছে নরসিংদির বেলাব উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের পাহাড় উজিলাব গ্রামের হোসেন আলীর পালিত কুকুর।

শনিবার পাহাড় উজিলাব বাজারে গিয়ে দেখা যায় হোসেন মিয়ার ওই কুকুরটি সাদা মাইক্রো দেখলেই ঘেউ ঘেউ করে আক্রমণের উদ্দেশ্য ছুটে যাচ্ছে। অন্য কোন রঙের গাড়ি বা মাইক্রো দেখলে কুকুরটির মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি।

এভাবে সাদা মাইক্রো দেখলেই ঘেউ ঘেউ করে আক্রমণের উদ্দেশ্য ছুটে চলা কুকুরটির জন্যে মরজাল-বেলাব সড়কে চলাচলকারী সাদা প্রাইভেট কার ও মাইক্রো চালকদের মধ্যে কুকুরটিকে নিয়ে এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী জানায় প্রায় ১০ বছর আগে উজিলাব বাজারের কাছে একটি সাদা প্রাইভেট কারের চাপায় মারা যায় কুকুরটির মা। সেদিনের কুকুর ছানাটি আজ অনেক বড় হয়ে গেলেও ভুলতে পারেননি চোখের সামনে মায়ের নির্মম হত্যার করুন দৃশ্য।

সেই গত হয়ে যাওয়া ১০ বছর আগের ক্ষতটি হয়তো কুকুরটির মনে এখনো তরতাজা দাগ কাটা। যার ফলে মায়ের হত্যাকারীকে আজও ক্ষমা করতে পারেননি। সাদা রঙের গাড়ি দেখলেই রক্ষা নেই আর। ছুটে চলে আক্রমণের জন্যে।

এ ব্যাপারে উজিলাব বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নীলু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন মায়ের প্রতি ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ১০ বছর আগের কুকুর ছানাটি।

কুকুরটির মালিক হোসেন আলী বলেন ১০ বছর আগে মাইক্রোর নিচে চাপা পড়ে মারা যায় তার মা। চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু দেখেছিলো কুকুরটি। আজও সাদা মাইক্রো দেখলেই আক্রমনের জন্যে ঘেউ ঘেউ করে ছুটে চলে।

উপজেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ড.শাখাওয়াত হোসেন বলেন মানসিকভাবে আঘাত পাওয়া পশুর মধ্যেও ঘটতে পারে এমনটা যা এই কুকুরটির মধ্যে ঘটেছে।